কবর, হ্যা কবর! মরার পর যেটা হবে আমাদের একমাত্র ঘর। পৃথিবীতে আপনি ১২০ তলা বিল্ডিং এ থাকতে পারেন, আপনি রাজপ্রাসাদে থাকতে পারেন, বড় কোনো আলিশান বাড়ি করে থাকতে পারেন কিন্তু মরে গেলে, তখন? তখন এই কবরই হবে একমাত্র ঘর যেখানে আপনাকে অনন্তকাল থাকতে হবে। ছোট্ট একটা ঘর কোনো আলো নেই, পর্যাপ্ত জায়গা নেই, ঘুমানোর জন্য বিছানা নেই, নেই কোনো বালিশ কিংবা গায়ে মোড়ানোর জন্য চাঁদর। হ্যা, চাঁদর একটা আছে তবে সেটা সাদা ধবধবে চাঁদর। এই চাঁদরে শীত নিবারণ হয় না। মরা মানুষের আবার শীত লাগে নাকি? হয়তো লাগে কিংবা লাগে না কিন্তু আমরা জানি না। মরা মানুষের শীত লাগলেও হয়তো তারা আমাদের বলতে পারে না।
কবরস্থান হলো পৃথিবীর সবচেয়ে নীরব জায়গা। আপনার মন খারাপ থাকলে আপনি কবরস্থান ঘুরে আসতে পারেন। সেখানে শুয়ে থাকা মানুষদের উপলব্ধি করতে পারেন। ভাবেন তো আপনি একটা কবরস্থান এ ঢুকলেন। রাজ্যের নীরবতা সেখানে। কোনো কোলাহল নেই। শত শত কিংবা হাজার হাজার মানুষ লাইন হয়ে ঘুমিয়ে আছে। এখানে কোনো ভেদাভেদ নেই। নেই সম্পদ নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব। নেই কোনো হিংসা, পরশ্রীকাতরতা কিংবা অহংকার। সবাই পাশাপাশি এক কাতারে নীরবে ঘুমিয়ে আছে। সবার সম্পদের পরিমান এক। সাড়ে তিন হাত মাটি আর তিন টুকরো সাদা কাপড়।
তারা সেই ব্যক্তি যারা এক সময় আপনার মতোই ছিলো। খেতো, ঘুমাতো, ঘুরতো, চলাফেরা করতো। তাদেরও মন খারাপ হতো। হয়তো তাদেরও মন খারাপ হলে তারাও এক সময় কোনো এক কবরস্থান এ গিয়ে চুপচাপ বসে থাকতো। কবরে শুয়ে থাকা মানুষ গুলোকে উপলব্ধি করতো। কিন্তু তারাও আজ কোনো এক কবরস্থানে ঘুমিয়ে আছে।
আজকে আপনার ভরা যৌবন। রক্ত গরম। আপনি চাইলে যা খুশি তাই করে ফেলতে পারেন। কিন্তু কবরস্থানে শুয়ে থাকা মানুষগুলো চাইলেই কিছু করতে পারে না। আমাদের যৌবন একদিন বিরতি নিবে, রক্ত ঠান্ডা হয়ে যাবে তারপর আমরা হঠাৎ-ই নিজেদের আবিষ্কার করবো, ছোট্ট, অন্ধকার একটা কুঠিরে যেখানে কোনো আলো নেই, ঘুমানোর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই, গায়ে জড়ানোর জন্য কোনো চাদর নেই। কবর, হ্যা এটাই কবর।
- শাকিল আব্দুল্লাহ (Shakil Abdullah)
0 Comments